প্রিয় পাঠক কেমন আছেন শীতের শীতল শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের পোষ্ট শুরু করছি। আমি বিডিজব পোষ্ট ওয়েবসাইটে শখের বসে পোষ্ট লিখে থাকি লেখালেখি করতে আমার বেশ ভাল লাগে। লিখলে জ্ঞান বারে লেখার দক্ষতা বারে, আমি আরও ভালবাসি ঘুড়ে বেড়াতে, ঘোরাঘুরি করতে যে আমার কতটা ভাল লাগে তা আমি আপনাদের বলে বোঝাতে পারব না। জানেন আমার খুব শখ আমি সারা প্রথীবি ঘুরে বেড়াব, কিন্তু আমি সামান্য একটা চাকরি করি আমার পক্ষে তো সারা পৃথীবি ঘুড়ে বেড়ানো সম্ভব নয় তাই সময় সুযোগ পেলে দেশের বিভিন্য প্রান্তে বেড়াতে চলে যাই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাই আরকি। তবে বলতেই হবে আমার প্রিয় মাতৃভুমী বাংলাদেশ সত্যিই দেখার মত দেশ, আমার দেশে খাল, বিল, নদী নালা, পাহাড়, ফসলি জমি কি নেই, ঝা চকচকে ইমারত দেখার থেকে আমি গ্রাম বাংলার প্রাকৃতীক দৃশ্য দেখতে বেশি ভালবাসি। একটু কল্পণা করুন তো দিগন্ত বিস্তৃত ফসলি জমির মাঝে একটি বড় গাছের নিচে বসে পাখির গান শুনতে শুনতে প্রকৃতীর অপরুপ দৃশ্য উপভোগ করতে কতটা ভাল লাগে। সৃষ্টিকর্তা যে তার আপন হাতে আমাদের এই প্রিয় পৃথীবিকে সাজিয়েছেন । নিজের মনের অজান্তেই একটি গজল মনের স্পিকারে বেজে ওঠে, এই সুন্দর ফুল সুন্দর ফল মিঠা নদীর পানি খোদা তোমার মেরেরবানী। গ্রাম বাংলার সহজ সরল মানুষদের কথা তো না বললেই নয়, তাদের আতিথিয়তা এবং সরলতা সত্যিই আমাকে মুগ্ধ করে। তাহলে একটা ঘটনা বলি শুনুন, একবার কুমাড়খালী উপজেলার শিলাইদাহ গ্রামে কবিগুরু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ী দেখতে গিয়েছিলাম।
যে দিন বেড়াতে গিয়েছিলাম সেদিন দুপুর থেকে শুরু হল প্রবল বৃষ্টি, সে এমন বৃষ্টি যেন দু ঘন্টার বৃষ্টিতেই পুরো শিলাইদাহ গ্রামকেই প্লাবিত করে ফেলবে। আমি সবে মাত্র কুঠিবাড়ীতে পৌছেছি এমন সময়ই নামল প্রবল বৃষ্টি। আমি নিরুপায় হয়ে কুঠিবাড়ীর ভেতরেই আশ্রয় গ্রহন করলাম। কুঠি বাড়ীর ভেতরে মোট ১১ টি ছোট বড় কক্ষ আছে, সদর দরজা দিয়ে মুল বাড়ীতে প্রবেশ করে কিছুটা পথ পায়ে হেটে একটি কক্ষ সামনে পরল। আমি সে কক্ষতে আশ্রয় গ্রহণ করলাম। কক্ষে রাখা একটি বেঞ্চিতে বসে বৃষ্টির অপরুপ দৃশ্য দেখতে দেখতে মন ছুটে গেল সেই ছোটবেলার শৃতিতে। তখন আমি ক্ল্রাস টু তে পারি আষাড় মাস, স্কুল থেকে আসার সময় হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হল। আমরা এক সাথে অনেকগুল ছেলে মেয়ে দল বেধে স্কুলে যেতাম, আমরা সবাই দল বেধে স্কুল থেকে বাড়ীতে আসতাম। সবাই মিলে এক সাথে হই হই করে স্কুলে যাওয়া আবার সবাই একসাথে বাড়ী ফেরা, সে যে কতটা আনন্দময় তা লিখে প্রকাশ করার মত মেধা শক্তি আমার নেই। যাই হোক আমি বসে বসে বৃষ্টি দেখছি এমন সময় এবজন বৃদ্ধ মানুষ আমার পাশে এস বসলেন, তিনি আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেলন, বাজান আপনার বাড়ী কই? আমি উত্তর দিলাম আমার বাড়ী ঢাকাতে, তিনি বলেলন, ঠাকুর বাড়ী দেকতি আইচেন আমি বললম জ¦ী। তারপর এক কথা দুই কথায় তার সাথে আমার খুব ভাব জমে গেল, এক পর্যায়ে তিনি বলেলন বাজান বাইরে তো খুব বৃষ্টি হচ্ছে আপনার দুপুরে খাওয়া হয়েছে,আমি বললাম জ্বী না চাচা, এখানে ভাল খাবার হোটেল কোথায় আছে আমাকে বলতে পারেন। সেই বৃদ্ধ হাসতে হাসতে বলেলন বাজান আপনি আমাদের এলাকার অতিথী আপনি বাইরে খাবেন কেন? আপনি আমার বাসায় চলুন আমার সাথে আপনার চাচীর হাতে রান্না করা ডাল ভাত খাবেন, আমরা গরীব চাষি মানুষ আপনাদের মত মাংশ পোলাও খেতে পারি না। আমি তার প্রস্তাবে রাজি হলাম না কিন্তু বৃদ্ধ মানুষটার জোরাজোরির কাছে পরাজিত হয়ে শেষ প্রর্যন্ত বাধ্য হলাম ওনার বাড়ীতে যেতে। বৃদ্ধ চাচার ঘর বলতে আছে একটি মাত্র চিনের ছাবরা, ছাবরা কি যারা জানেন না তাদের জন্য বলছি ছাবরা হল এমন এক ঘর যে ঘরের চাল টিন দিয়ে পাকা ঘরের ছাদের মত করে নির্মাণ করা হয়। চাচা আমাকে বাড়ীতে নিয়ে গিয়ে চাচিকে বলেলন, দেখ বাড়ীতে মেহমান এসেছে, তারপর চাচা চাচীকে আমার সাথে দেখা হওয়া ও পরিচয় হবার পুরো ঘটনা খুলে বলেলন। চাচী সব শুনে অত্যান্ত দরদ ভরা কন্ঠে আমাকে বলেল ও বাজান তোমার কোন চিন্তা নাই মনে করো আমি তোমার মা তোমার মত আমার একটি ছেলে ছিল সাত দিনের কালা জ্বরে ছেলেটা মারা গেছে কথাটা বলতে গিয়ে বৃদ্ধ চাচী হুহু করে কেদে ফেলেলন।
প্রিয় পাঠক আজ এ প্রর্যন্তই আবার আরেকটি পর্বে বাকি ঘটনা লিখব তা না হলে এক পর্বেই যদি পুরো কাহীনিটি লিখতে চাই তবে লেখাটি অনেক লম্বা হয়ে যাবে। ভাল থাকবেন সুস্থ্য থাকবেন, আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকবেন ধন্যবাদ।