মোবাইল ফোন হল বিজ্ঞানের আশীর্বাদ এটি এমন একটি যন্ত্র যা দিয়ে আমরা মুহুর্তেই যোগাযোগ স্থাপন করতে পারি পৃথীবির যে কোন প্রান্তে। এই ডিভাইসটির রয়েছে নানা রকম ব্যবহার, কথা বলা থেকে শুরু করে বিনোদন, পড়াশোনা সহ নানা কাজে এই ডিভাইস ব্যবহার হয়ে আসছে। এ ডিভাইসের যেমন আছে কিছু ভাল দিক আবার ঠিক তেমনই আছে কিছু ক্ষতিকর দিক, যেমন দির্ঘ সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে যা হতে পারে তা হল অকাল মৃত্যু, রিদ রোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার সহ নানা রোগ ব্যাধি। তাছাড়া মোবাইল ফোনের অতী ব্যবহার আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যও ঝুকিতে ফেলতে পারে। হতে পারে খিটখিটে মেজাজ সৃতিভংশ রোগের মত রোগসুমূহ। এজন্য মোবাইল ব্যবহারে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত। এবার মোবাইল শিশুদের কি ধরণের ক্ষতি করে সে বিষয়ে আলেচনা করা যাক।
প্রিয় পাঠক একটু ভাবুন তো আমাদের ছেলেবেলা যেভাবে খেলা ধুলা দৌড় ঝাপ করে কেটেছে আমাদের শিশুদের সৈশব কি সেভাবে কাটছে? আমরা দাদা দাদিদের কাছ থেকে রাতে গল্প সুনতে সুনতে গুমোতে যেতাম আর আমাদের বাচ্চারা কি পদ্ধতিতে ঘূমায়? বর্তমানে শিশুদের খেলাধুলা করার সে সুযোগ সিমিত হয়ে আসছে, কমছে খেলার মাঠ, বাড়ছে ঘড় বাড়ী, কল কারখানা, কমছে শিশুদের খেলার সময়, বাড়ছে শিশুদের লেখাপড়ার চাপ। এমতঃ অবস্থায় শিশুদের সহজ একটি বিনোদন মাধ্যম হয়ে উঠেছে মোবাইল ফোন। বর্তমান সময়ে কোন বাচ্চা খাবার না খেতে চাইলেই মা সেই বাচ্চার হাতে মোবাইল ধরিয়ে দিয়ে বলেন, বাবা কার্টুন দেখ আর খাও, এ ভাবেই শিশুদের মোবাইল আকক্তি সৃষ্টি হয় সেই মায়ের প্রয়জন ছিল বাচ্চাটাকে আদর করে নানা রকম গান বা গল্প শুনিয়ে খাবারটা খাওয়ানো। কিন্তু সেটা ক্রমেই আমাদের সমাজ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। পিতা, মাতা, দাদা, দাদির আদর ভালবাসার জায়গা দখল করেছে মোবাইল ফোন। এই ডিভাইস শিশুদের ভিডিও গেইমের প্রতি আসক্তি সৃষ্টি করছে পরবর্তিতে সেটি রুপ নিচ্ছে নেশায়। একটা সময় নেশাগ্রস্থ শিশুটির আর লেখাপড়ায় মোনোযোগ থাকে না। তখন সেই শিশুটির লেখাপড়া থেকে শুরু করে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিস্ক। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ করে, সৃষ্টি করে নানা ধরণের রোগ ব্যাধি। এ সময়ে মোবাইল আসক্তি যেভাবে বেড়ে চলেছে এই পেক্ষাপটে সানি’স স্কুল অব পাবলিক হেল্থ এর ডিন ডেভিড কার্পেন্টার বলেনঃ অতি দ্রæত আমরা একটি মহামারি রোগ দ্বারা আক্রান্ত হতে যাচ্ছি যেটি হল মস্তিস্ক ক্যান্সার. সেলুলার ফোনে ব্যাবহুত রেডিয়েশন আমাদের দেহে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যাবহার আমাদের বাচ্চাদের শ্রবণশক্তি হ্রাস করতে পারে। এমতঃ অবস্থায় আমাদের উচিত ১৮ বছরের কম বয়সি শিশু বা কিশোর কিশোরীদের মোবাইল ফোন ব্যাবহার করতে নিরুৎসাহিত করা। এবং এ বিষয়ে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি করা। এ জন্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। একজন শিক্ষক তার ক্রাস রুমে শিশুদের বোঝাবেন মোবাইল ফোন ব্যাবহারের ক্ষতি সম্পর্কে, একজন বাবা তার সন্তানকে বোঝাবেন অতিরিক্ত সেলুলার ফোন ব্যাবহারের ভয়াবহতা। তাছাড়াও দাদা, দাদি,নানা, নানি, চাচা, চাচি সকলকেই এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং শিশুদের ক্রমাগত বোঝাতে হবে মাত্রাতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যাবহারের কুফল সম্পর্কে।
আমাদের কত্যর্বঃ
শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য শিশুদের খেলাধুলা করার সুযোগ করে দেয়া। অবিভাবকদের উচিত শিশুদের সাথে মেশা তাদের সময় দেয়া তাদের সাথে থেলা ধুলা করা তাদের নানা রকম শিক্ষনিয় গল্প কবিতা কিংবা সাহিত্য পড়তে দেয়া। তবে খেয়াল রাখতে হবে কোন অবস্থাতেই যেন সেগুল শিশুর ওপর বারতি কোন চাপ সৃষ্টি না করে। আরও খেলার রাখতে হবে শিশুর ওপর অতিরিক্ত লেখাপড়ার চাপ যেন না দেয়া হয় এবং প্রয়জনে অবশ্যই শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া।
প্রিয় পাঠক লেখাটি পড়ে আপনার কেমন লাগল কিংবা আপনি আপনার বাচ্চা বা পরিবারের শিশুদের সাথে কেমন ব্যাবহার করেন তা অবশ্যই মন্তব্য করে জানাবেন ধন্যবাদ.